ইসিবি কর্মকর্তারা উদ্বেগের কিছু দেখছেন না

নিয়ন্ত্রক সংস্থার কার্যকর পদক্ষেপের ফলে ইউরো এখনও সৃষ্ট চাপ মোকাবিলা করতে সক্ষম হচ্ছে।

আজ এক সাক্ষাৎকারে ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের (ইসিবি) গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য জোয়াকিম নাগেল জানিয়েছেন, তিনি ইসিবির আর্থিক নীতিমালা নিয়ে সন্তুষ্ট। সোমবার সিওলে দেওয়া ভাষণে সম্প্রতি ইসিবি প্রতিনিধিদের প্রমিত অবস্থান তুলে ধরে বুন্ডেসব্যাংকের প্রেসিডেন্ট বলেন, "আমাদের পূর্বাভাস অনুযায়ী, বর্তমানে সুদের হার একটি ভাল পর্যায়ে রয়েছে। ইসিবির আর্থিক নীতিমালা বর্তমানে সামগ্রিকভাবে নিরপেক্ষ।"

নাগেলের এমন এক সময় এই মন্তব্য করেছে, যখন ইউরোজোনে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মন্থরতা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। কিছু বিশ্লেষকের মতে, বর্তমান স্তরে সুদের হার বজায় রাখার মাধ্যমে ইসিবি ঝুঁকি নিচ্ছে—বিশেষত ঋণে ভারাক্রান্ত দেশগুলোর অর্থনীতি চাপে পড়তে পারে। তবে নাগেল জোর দিয়ে বলেন, ইসিবির প্রধান অগ্রাধিকার হল মূল্যস্ফীতির স্থিতিশীলতা বজায় রাখা এবং বর্তমান আর্থিক নীতিমালা সেই লক্ষ্য পূরণের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ।

প্রত্যাশিতভাবেই, এই অবস্থানের ফলে মার্কেটে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। একদিকে, রক্ষণশীল বিনিয়োগকারীরা মূল্যস্ফীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ইসিবির প্রতিশ্রুতিকে স্বাগত জানিয়েছে। অন্যদিকে, নমনীয় আর্থিক নীতিমালার সমর্থকরা আশঙ্কা করছেন যে এটি আরও দীর্ঘস্থায়ী অর্থনৈতিক মন্দার দিকে ঠেলে দিতে পারে।

ইসিবির নীতিনির্ধারকরা এখন বছরের শেষ বৈঠকের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। বিনিয়োগকারী ও অর্থনীতিবিদরা ব্যাপকভাবে আশা করছেন যে, টানা চতুর্থবারের মতো সুদের হার অপরিবর্তিত রাখা হবে। বর্তমানে মূল্যস্ফীতি যখন ২%-এর আশেপাশে রয়েছে এবং মার্কিন শুল্ক বৃদ্ধির প্রভাব সত্ত্বেও ইউরোজোনের অর্থনীতি স্থিতিশীল রয়েছে, তখন বেশিরভাগ নীতিনির্ধারকই এই নিরপেক্ষ অবস্থানে সন্তুষ্ট।

তবে এই দৃশ্যত শান্ত পরিস্থিতির আড়ালে আগামী দিনের নীতিনির্ধারণ নিয়ে বিতর্ক তীব্রতর হচ্ছে। যদিও বর্তমানে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, উৎপাদন খাতসহ সামগ্রিক দুর্বল অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিয়ে উদ্বেগ রয়ে গেছে। গভর্নিং কাউন্সিল কয়েকজন সদস্য অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে মন্থরতার লক্ষণগুলো ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণের এবং আগামী বছর নীতিমালা নমনীয় করার প্রস্তুতি রাখার পক্ষপাতী। একই সময়ে, রক্ষণশীল গোষ্ঠী আগেভাগে উদযাপন থেকে সতর্ক থাকতে বলছে। তারা জ্বালানি মূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনার মতো বাকি থাকা ঝুঁকিগুলোর দিকে ইঙ্গিত করছে—বিশেষ করে বাণিজ্য শুল্কের প্রভাব মুদ্রাস্ফীতিকে নিরবিচারে প্রভাবিত করতে পারে। তাদের মতে, মূল্যস্ফীতির স্থিতিশীলতার উপর কঠোর নিয়ন্ত্রণই অগ্রাধিকার পাওয়া উচিত—এমনকি যদি তা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে সীমিত পর্যায়ে মন্থরতা ডেকে আনে তা হলেও।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কয়েকজন কর্মকর্তা উৎপাদন কার্যক্রমের হ্রাস ও ভোক্তা মূল্যের ঊর্ধ্বগতির সম্ভাব্য ঝুঁকি নিয়ে উদ্বিগ্ন। ডিসেম্বর মাসে প্রকাশিতব্য নতুন পূর্বাভাসে দেখা যেতে পারে যে ২০২৬ ও ২০২৭ সালে মুদ্রাস্ফীতি ২%-এর নিচে থাকবে—যা ডিসেম্বরেই সুদের হারের সম্ভাব্য হ্রাস অথবা পরের বছরে ব্যাপক নমনীয়করণের প্রস্তাবকে জোরালো করতে পারে। নাগেল জানান এই পূর্বাভাসে "২০২৮ সালের প্রাথমিক পূর্বাভাস অন্তর্ভুক্ত থাকবে। এই পূর্বাভাসের ভিত্তিতে, আমরা নির্ধারণ করতে পারব যে মধ্যমেয়াদে মুদ্রাস্ফীতির আমাদের লক্ষ্যমাত্রার দিকে এগিয়ে যাওয়ার সক্ষমতা কতটুকু বজায় রয়েছে।"

ইতিপূর্বে স্মরণ করিয়ে দেওয়া হচ্ছে যে গত সপ্তাহে ইসিবির প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিন লাগার্ড বলেছেন, ইসিবি বেশ ভালো অবস্থানে রয়েছে, কারণ বর্তমানে ঋণের ব্যয় উপযুক্ত স্তরে রয়েছে।

EUR/USD-এর বর্তমান টেকনিক্যাল চিত্র অনুযায়ী, এখন ক্রেতাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত এই পেয়ারের মূল্যের 1.1615 লেভেল ব্রেক করানো। কেবলমাত্র এই লেভেল ব্রেক করতে পারলেই এই পেয়ারের মূল্যের 1.1635 লেভেলে পৌঁছানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা যেতে পারে। সেখান থেকে, এই পেয়ারের মূল্য 1.1655 পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে, যদিও মার্কেটের বড় ট্রেডারদের সহযোগিতা ছাড়া মূল্যের সেখানে পৌঁছানো কঠিন হবে। সবচেয়ে দূরবর্তী লক্ষ্যমাত্রা হলো 1.1675-এর লেভেল। যদি ট্রেডিং ইনস্ট্রুমেন্টটির মূল্য কমে যায়, তাহলে আমি মূল্য 1.1585 এর আশেপাশে থাকা অবস্থায় ক্রেতাদের সক্রিয় হওয়ার আশা করছি। যদি মূল্য সেখানে থাকা অবস্থায় মার্কেটে কেউ এন্ট্রি না করে, তাহলে মূল্যের 1.1560 লেভেলে পুনরায় নেমে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করা, কিংবা 1.1530 থেকে লং পজিশন ওপেন করাই বুদ্ধিমানের হবে।

GBP/USD-এর বর্তমান টেকনিক্যাল চিত্র অনুযায়ী, পাউন্ডের ক্রেতাদের এই পেয়ারের মূল্যের প্রাথমিক রেজিস্ট্যান্স 1.3240 ব্রেক করাতে হবে। কেবলমাত্র এতে সফল হলে তারা মূল্যকে 1.3265 এর লক্ষ্যমাত্রায় নিয়ে যেতে পারবে, যার উপরে ব্রেকআউট করা যথেষ্ট কঠিন হবে। সবচেয়ে দূরবর্তী লক্ষ্যমাত্রা হলো 1.3300 লেভেল। যদি এই পেয়ারের মূল্য কমে যায়, তাহলে মূল্য 1.3210-এ থাকা অবস্থায় বিক্রেতারা মার্কেটের নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করবে। তারা যদি এতে সফল হয়, তাহলে এই রেঞ্জের ব্রেকআউট হলে সেটি ক্রেতাদের জন্য একটি বড় ধাক্কা হবে এবং GBP/USD পেয়ারের মূল্য 1.3185-এর দিকে নেমে যেতে পারে, যেখানে সম্ভাব্য পরবর্তী গন্তব্য হিসেবে মূল্য 1.3155-এর দিকে যেতে পারে।