শুক্রবার আবারও খুবই স্বল্প মাত্রার অস্থিরতার সাথে EUR/USD পেয়ারের ট্রেডিং করা হয়েছে, যেখানে এই পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্ট ৪০ পিপসও অতিক্রম করেনি। বাস্তবে, আমরা কয়েক মাস ধরেই এই পেয়ারের মূল্যের সীমিত মাত্রার অস্থিরতা নিয়ে আলোচনা করছি এবং দুঃখজনকভাবে, এই পরিস্থিতি নিয়ে বিশেষ কিছু করার নেই। মার্কেটে এখনও এক ধরনের স্থবিরতা বিরাজ করছে এবং পরপর ছয় মাস ধরে দৈনিক টাইমফ্রেমে 1.1400 থেকে 1.1830-এর সাইডওয়েজ রেঞ্জ মধ্যে ট্রেড করার প্রবণতা বজায় রয়েছে। ফলে, নতুন ট্রেডারদের জন্য বর্তমানে শুধুমাত্র সীমিত রেঞ্জভিত্তিক মুভমেন্টের প্রত্যাশা করাই উপযুক্ত। শুক্রবার কিছুটা ভিন্ন পরিস্থিতি সৃষ্টির সম্ভাবনা ছিল, কারণ সেদিন মৌলিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটের প্রভাব তুলনামূলকভাবে বেশি সক্রিয় ছিল। ইউরোজোনে তৃতীয় প্রান্তিকের চূড়ান্ত জিডিপি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে PCE মূল্যসূচক ও ইউনিভার্সিটি অব মিশিগান থেকে ভোক্তা মনোভাব সূচক প্রকাশিত হয়েছে। তবে বর্তমানে, এই ধরনের (বিশেষ করে স্বল্প গুরুত্বসম্পন্ন) সামষ্টিক প্রতিবেদন ট্রেডিংয়ে খুব বেশি প্রভাব ফেলছে না। ভোক্তা মনোভাব সূচকের ফলাফল প্রত্যাশার চেয়ে ইতিবাচক ছিল এবং এতে ডলারের দর ২০ পিপস পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু মূল প্রশ্ন হলো—মাত্র ২০ পিপসের এমন মুভমেন্টের প্রতি আসলে কতজন ট্রেডার আগ্রহী?
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট৫-মিনিটের টাইমফ্রেম লক্ষ্য করলে স্পষ্টভাবে বোঝা যায় যে শুক্রবার EUR/USD পেয়ারের মূল্যের ঠিক কেমন মুভমেন্ট হয়েছে। পরিস্থিতি এমন ছিল যে, সিগন্যাল গঠনের পর সৃষ্ট মুভমেন্ট মার্কেটের স্বাভাবিক নয়েজের চেয়েও দুর্বল ছিল। এই পেয়ারের মূল্য কেবলমাত্র 1.1655-1.1666 রেঞ্জ থেকে ১৮ পিপস কমেছিল। নতুন ট্রেডাররা এর ফলে সামান্য মুনাফা অর্জন করতে পারত, তবে সিগন্যাল গঠিত হওয়ার জন্য দীর্ঘসময় অপেক্ষা করতে হত।
সোমবার কীভাবে ট্রেডিং করতে হবে:ঘন্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে এখনও EUR/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা গঠিত হচ্ছে, যেটা ট্রেন্ডলাইন দ্বারা ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। মার্কিন ডলারের জন্য মৌলিক এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট এখনো নেতিবাচক রয়ে গেছে, তাই আমরা EUR/USD পেয়ারের মূল্যের আরও ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্টের প্রত্যাশা করছি। এমনকি টেকনিক্যাল দিক থেকেও এই মুহূর্তে ইউরো ইতিবাচক সহায়তা পাচ্ছে, কারণ দৈনিক চার্টে সাইডওয়েজ রেঞ্জভিত্তিক মুভমেন্ট এখনও চলমান রয়েছে এবং এই রেঞ্জের নিচের সীমার কাছাকাছি মূল্য বিপরীতমুখী হওয়ার পর উপরের সীমার দিকে এই পেয়ারের মূল্য বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে।
সোমবার নতুন ট্রেডারদের আবারও 1.1655-1.1666 এরিয়ার প্রতি মনোযোগ দেওয়া উচিত হবে, কারণ আপাতত বিকল্প কোনো গুরুত্বপূর্ণ ট্রেডিং লেভেল নেই। যদি এই পেয়ারের মূল্য এই এরিয়া থেকে বাউন্স করে, তাহলে মূল্যের 1.1584-1.1591-এর দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে শর্ট পজিশনে এন্ট্রি করা যেতে পারে। অপরদিকে, যদি এই পেয়ারের মূল্য এই এরিয়ার ওপরে কনসলিডেট করে, তাহলে মূল্যের 1.1745-এর দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে লং পজিশন ওপেন করার সুযোগ তৈরি হবে।
৫-মিনিট টাইমফ্রেমে প্রাসঙ্গিক লেভেলসমূহ হল: 1.1354-1.1363, 1.1413, 1.1455-1.1474, 1.1527-1.1531, 1.1550, 1.1584-1.1591, 1.1655-1.1666, 1.1745-1.1754, 1.1808, 1.1851, 1.1908 এবং 1.1970-1.1988।সোমবার শুধুমাত্র একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে — সেটি হচ্ছে জার্মানির শিল্প উৎপাদন সংক্রান্ত প্রতিবেদন। যদিও গত শুক্রবার চারটি আরও গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশিত হলেও এই পেয়ারের মূল্যের মাত্র ৩০ পিপসের মতোই মুভমেন্ট হয়েছে, তাহলে একটি স্বল্প গুরুত্বসম্পন্ন প্রতিবেদনের প্রভাবে সোমবার কী ধরনের প্রতিক্রিয়ার আশা করা যায়?
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।চার্টে কী কী রয়েছে:সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।নতুন ট্রেডারদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।