সোমবার EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার মধ্যে কারেকশন অব্যাহত ছিল। তবে এই পর্যায়ে এটি নিশ্চিতভাবে বলা কঠিন যে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা এখনও অটুট রয়েছে। গতকাল এই পেয়ারের মূল্য অ্যাসেন্ডিং ট্রেন্ড লাইনের নিচে অবস্থান গ্রহণ করেছে, ফলে আনুষ্ঠানিকভাবে এখন নিম্নমুখী প্রবণতা শুরু হয়েছে। তবুও, আমরা গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়ের প্রতি নতুন ট্রেডারদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই। মার্কেটে এখনও খুব দুর্বল মুভমেন্ট পরিলক্ষিত হচ্ছে, তাই এমন পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে যেখানে ট্রেন্ড লাইনের ব্রেক ঘটলেই প্রকৃতপক্ষে প্রবণতার পরিবর্তনের ঘটবে তা নয় বরং দীর্ঘমেয়াদী কারেকশন এবং প্রাথমিকভাবে দুর্বল মোমেন্টামের কারণে এমন পরিস্থিতি দেখা যাচ্ছে। এটি মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে এই সপ্তাহে ফেডারেল রিজার্ভের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে এবং তুলনামূলকভাবে ডলারের আরও দরপতনের সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়াও, সোমবার জার্মানির শিল্প উৎপাদন সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। যদিও এই প্রতিবেদনটি খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ নয়, তবে সূচকটি পূর্বাভাসের তুলনায় ইতিবাচক ফলাফল প্রদর্শন করেছে। স্বাভাবিকভাবেই, মার্কেটের ট্রেডাররা EUR/USD পেয়ারের মূল্যকে সামান্য ঊর্ধ্বমুখী করতে পারত। দৈনিক টাইমফ্রেমে এই পেয়ারের মূল্য এখনও ফ্ল্যাট রেঞ্জের মধ্যে রয়েছে, তাই 1.1800 লেভেলের (রেঞ্জের উপরের সীমানা) দিকে মূল্য বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে, গতকাল একটি মাত্র সেল সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল। ইউরোপীয় ট্রেডিং সেশন জুড়ে 1.1655-1.1666 এরিয়ায় মূল্যের রিবাউন্ডের মাধ্যমে এই সিগন্যালটি গঠিত হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত, এই পেয়ারের মূল্য প্রায় ২৫ পিপস হ্রাস পায়, তাই এই সিগন্যাল থেকে সামান্য মুনাফা করা সম্ভব হয়েছিল। তবে বর্তমানে উল্লেখযোগ্য মুনাফার আশা করা ঠিক নয়, কারণ মার্কেটে এখনও স্বল্প মাত্রার অস্থিরতা বিরাজ করছে।
ঘন্টাভিত্তিক চার্টে দেখা যাচ্ছে যে, ট্রেন্ড লাইন ব্রেক করলেও EUR/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা গঠনের প্রক্রিয়া এখনো চলমান রয়েছে। মার্কিন ডলারের ক্ষেত্রে সামগ্রিক মৌলিক এবং সামষ্টিক প্রেক্ষাপট এখনও নেতিবাচক রয়েছে, ফলে আমরা এই পেয়ারের মূল্য বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে বলে প্রত্যাশা করছি। এমনকি টেকনিক্যাল কারণগুলোও ইউরোর পক্ষে কাজ করছে, কারণ দৈনিক টাইমফ্রেমে সাইডওয়েজ রেঞ্জভিত্তিক মুভমেন্ট অব্যাহত রয়েছে, এবং এই রেঞ্জের নিচের সীমায় গিয়ে মূল্য বিপরীতমুখী হওয়ার পর উপরের সীমার দিকে মুভমেন্টের আশা করা যুক্তিযুক্ত হবে।
মঙ্গলবার নতুন ট্রেডাররা আবারও 1.1655–1.1666 এরিয়ার ওপর ভিত্তি করে ট্রেডিং করতে পারেন, কারণ আপাতত কার্যকর কোনো বিকল্প লেভেল নেই। যদি মূল্য এই এরিয়া থেকে রিবাউন্ড করে, তাহলে মূল্যের 1.1584–1.1591 পর্যন্ত যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে শর্ট পজিশন ওপেন করা যেতে পারে। আর যদি মূল্য এই এরিয়ার ওপরে স্থিতিশীলভাবে কনসোলিডেট করে, তাহলে মূল্যের 1.1745 পর্যন্ত যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে লং পজিশন ওপেন করা যাবে।
৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে প্রাসঙ্গিক লেভেলসমূহ হল: 1.1354-1.1363, 1.1413, 1.1455-1.1474, 1.1527-1.1531, 1.1550, 1.1584-1.1591, 1.1655-1.1666, 1.1745-1.1754, 1.1808, 1.1851, 1.1908, এবং 1.1970-1.1988। মঙ্গলবার ইউরোজোনে কোনো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে না বা কোনো ইভেন্টও নির্ধারিত নেই, তবে যুক্তরাষ্ট্রে JOLTs এবং চাকরির শূন্যপদ সংক্রান্ত তুলনামূলকভাবে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে, সেইসাথে বেসরকারী খাতে কর্মসংস্থানের পরিবর্তন সংক্রান্ত সাপ্তাহিক ADP প্রতিবেদনও প্রকাশ করা হবে। এই প্রতিবেদনগুলোর ফলাফল মার্কেটে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।চার্টে কী কী রয়েছে:সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।নতুন ট্রেডারদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।