১০ ডিসেম্বর কীভাবে GBP/USD পেয়ারের ট্রেডিং করবেন? নতুন ট্রেডারদের জন্য ট্রেডিংয়ের সহজ পরামর্শ ও বিশ্লেষণ

মঙ্গলবারের ট্রেডিংয়ের বিশ্লেষণ: GBP/USD পেয়ারের 1-ঘন্টার চার্ট

মঙ্গলবার GBP/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের তেমন কোনো উল্লেখযোগ্য মুভমেন্ট দেখা যায়নি, যদিও মার্কেটে মৌলিক ও সামষ্টিক অর্থনীতিভিত্তিক প্রেক্ষাপটের প্রভাব বিদ্যমান ছিল। গতকাল ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের গভর্নর অ্যান্ড্রু বেইলি বক্তব্য দেন এবং যুক্তরাষ্ট্র থেকে JOLTs ও ADP থেকে শ্রমবাজার সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। তবে শুরুতেই আমরা সতর্ক করেছিলাম যে, যুক্তরাষ্ট্রের এসব প্রতিবেদনের ব্যাপারে খুব বেশি প্রত্যাশা করা উচিত হবে না, কারণ এগুলোর বড় একটি অংশ পূর্ববর্তী মাসের অথবা মাত্র এক সপ্তাহের ফলাফল প্রতিফলিত করে। বাস্তবিক অর্থেই, JOLTs থেকে প্রকাশিত প্রতিবেদনের ফলাফল মার্কিন ডলারকে কিছুটা সহায়তা করেছে (মূলত সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে সৃষ্ট কর্মসংস্থানের সংখ্যা প্রত্যাশার তুলনায় বেশি ছিল), তবে এই পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্ট পূর্ববর্তী কয়েক দিনের মতোই ছিল। ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের গভর্নরের বক্তব্য থেকেও কোনো নতুন বার্তা পাওয়া যায়নি। এর ফলস্বরূপ, এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার মধ্যেই টানা চতুর্থ দিন কারেকশন ভিত্তিক মুভমেন্ট দেখা যাচ্ছে, যদিও মূল্য এখনও ট্রেন্ডলাইনের নিচে স্থির হয়নি। তাই আজ ফেডারেল ওপেন কমিটির বৈঠকের আগে আবারো এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা শুরু হতে পারে বলে প্রত্যাশা করা যায়।

GBP/USD পেয়ারের 5M চার্ট

৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে মঙ্গলবার তিনটি ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল। তবে এই তিনটি সিগন্যালের কার্যকারিতাই আশানুরূপ ছিল। যদিও সিগন্যালগুলোর গঠন ছিল মোটামুটি ইতিবাচক ছিল, তবে মার্কেটে অস্থিরতার মাত্রা অত্যন্ত দুর্বল ছিল। প্রথমে, এই পেয়ারের মূল্য 1.3319–1.3331 এরিয়ার উপরে কনসোলিডেট করে, এরপর একই এরিয়ার নিচে চলে যায় এবং পরবর্তীতে এই এরিয়া থেকে নিচের দিকে বাউন্স করে। তিনটি ক্ষেত্রেই এই পেয়ারের মূল্যের সর্বোচ্চ ২০ পিপস পর্যন্ত মুভমেন্ট হতে দেখা গেছে, যা খুবই সীমিত।

বুধবার কীভাবে ট্রেডিং করতে হবে:

ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে স্থানীয় পর্যায়ে এখনও GBP/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা গঠিত হচ্ছে। পূর্বে যেমনটি বলা হয়েছিল, মধ্যমেয়াদে ডলারের দর বৃদ্ধিতে সহায়তা করার মতো কোনো বৈশ্বিক মৌলিক উপাদান নেই; তাই আমরা শুধুমাত্র এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্টেরই প্রত্যাশা করছি। দৈনিক টাইমফ্রেমে বর্তমানে চলমান কারেকশন/ফ্ল্যাট রেঞ্জভিত্তিক মুভমেন্ট এখনও শেষ হয়নি বটে, তবে ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে গঠিত যেকোনো স্থানীয় প্রবণতাই সামগ্রিকভাবে আবারও একই ধরণের প্রবণতা শুরু হওয়ার ইঙ্গিত দিতে পারে। চলতি সপ্তাহে ফেডারেল ওপেন মার্কেট কমিটির বৈঠকের ফলাফল এমন একটি ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা প্রতিষ্ঠায় সহায়ক হতে পারে।

বুধবার, নতুন ট্রেডাররা আবারও 1.3319–1.3331 এরিয়ার মধ্যে ট্রেডিং সিগন্যাল গঠনের প্রত্যাশা করতে পারে। যদি এই পেয়ারের মূল্য এই এরিয়ার উপরে স্থির হয়, তাহলে মূল্যের 1.3413-এর দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে নতুন লং পজিশন ওপেন করা যেতে পারে। অন্যদিকে, এই এরিয়া থেকে মূল্য নিচের দিকে বাউন্স করলে, মূল্যের 1.3259–1.3267-এর দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে শর্ট পজিশনে এন্ট্রি করা যেতে পারে।

তবে, এটি মনে রাখা জরুরি যে, দিনের বেলা এই পেয়ারের মূল্যের অস্বাভাবিকভাবে দুর্বল মুভমেন্ট দেখা যেতে পারে, কিন্তু সন্ধ্যা নাগাদ মার্কেটে উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং অনিশ্চিত মুভমেন্ট দেখা যেতে পারে।

৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে বর্তমানে ট্রেডিংয়ের জন্য উপযুক্ত লেভেলগুলো হলো: 1.2913, 1.2980–1.2993, 1.3043, 1.3096–1.3107, 1.3203–1.3212, 1.3259–1.3267, 1.3319–1.3331, 1.3413–1.3421, 1.3466–1.3475, 1.3529–1.3543, এবং 1.3574–1.3590।

বুধবার যুক্তরাজ্যে তেমন কোনো গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট নির্ধারিত নেই বা কোনো অর্থনৈতিক প্রতিবেদনও প্রকাশিত হবে, তবে যুক্তরাষ্ট্রে সন্ধ্যায় ফেডারেল ওপেন মার্কেট কমিটির বছরের শেষ বৈঠকের ফলাফল ঘোষণা করা হবে। একইসাথে ফেডের চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েল বক্তব্য দেবেন এবং ডট-প্লট রিপোর্ট প্রকাশিত হবে, যা মার্কেটে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে।

ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।চার্টে কী কী রয়েছে:সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

নতুন ট্রেডারদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য

গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।

ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।