ডলার এখনো চাপের মধ্যে রয়েছে

গতকাল নিউইয়র্ক ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জন উইলিয়ামস মন্তব্য করেছেন, "গত সপ্তাহে সুদের হার হ্রাসের সিদ্ধান্তের পর আগামী বছরের জন্য মুদ্রানীতি বেশ ভাল অবস্থানে রয়েছে,"—যার ফলে মার্কিন ডলারের আরও দরপতন হয়।

সোমবার জার্সি সিটির এক ইভেন্টে বক্তব্যে উইলিয়ামস বলেন, "মুদ্রানীতির মূল কাজ হলো ঝুঁকির ভারসাম্য রক্ষা করা। সেই লক্ষ্যেই ফেড কিছুটা কঠোর মুদ্রানীতি থেকে নিরপেক্ষ অবস্থান গ্রহণ করেছে। এই সব পদক্ষেপের ফলে, ২০২৬ সাল আগমনের প্রেক্ষিতে মুদ্রানীতির বর্তমান অবস্থান যথাযথ।"

বিনিয়োগকারীরা উইলিয়ামসের বক্তব্যকে এই ইঙ্গিত হিসেবে ব্যাখা করেছেন যে, ফেড শিগগিরই সুদের হার পরিবর্তনের কোনো পরিকল্পনা করছে না, ফলে অন্যান্য মুদ্রার তুলনায় মার্কিন ডলার কম আকর্ষণীয় হয়ে পড়ছে।

তবে মার্কেটের ট্রেডারদের মধ্যে ডলারের ভবিষ্যৎ গতিপথ নিয়ে মতপার্থক্য রয়েছে। কেউ কেউ মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্রের শক্তিশালী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি দীর্ঘমেয়াদে ডলারকে সহায়তা করবে। অন্যদিকে, অনেকে মনে করেন, ফেডের সুদের হার হ্রাস ও ক্রমবর্ধমান বাজেট ঘাটতি ডলারের ওপর আরও চাপ সৃষ্টি করবে।

বর্তমানে ফেডের কর্মকর্তাদের মধ্যেও স্পষ্ট মতবিরোধ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। গত সপ্তাহে ফেড ২৫ বেসিস পয়েন্ট সুদহ্রাস করেছে, যা এ বছরের তৃতীয় ধারাবাহিক হ্রাস। এতে ফেডের সুদের হার ৩.৫% থেকে ৩.৭৫% লক্ষ্যমাত্রায় নেমে এসেছে। এই সিদ্ধান্তে তিনজন কর্মকর্তা ভিন্নমত প্রকাশ করেছেন—এর মধ্যে দুজন আঞ্চলিক ফেড প্রেসিডেন্ট সুদের হার অপরিবর্তিত রাখার পক্ষে ছিলেন এবং ফেড গভর্নর স্টিভেন মিরানের মতে, আরও বেশি মাত্রায় (০.৫০%) সুদের হার হ্রাস করা উচিত ছিল।

উইলিয়ামস তার বক্তব্যে আরও বলেন, ২০২৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ২.২৫%-এ পৌঁছাতে পারে, যা ২০২৫ সালের পূর্বাভাস ১.৫%-এর চেয়ে বেশি। এই প্রবৃদ্ধি মূলত আর্থিক নীতি, অনুকূল আর্থিক পরিস্থিতি এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় বিনিয়োগের কারণে সম্ভব হবে। তিনি আরও জানান, মূল্যস্ফীতির হার ২০২৬-এ কমে ২.৫%-এর নিচে আসবে এবং ২০২৭ সালে ফেডের ২%-এর লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারে।

প্রশ্নোত্তর পর্বে নিউইয়র্ক ফেড প্রধান উল্লেখ করেন, ফেডের মূল লক্ষ্য অর্জনে দুটি গুরুত্বপূর্ণ ঝুঁকির ভিত্তিতে বর্তমানে মুদ্রানীতি সমন্বয় করা হচ্ছে: অতিরিক্ত মূল্যস্ফীতি কিংবা খুব দুর্বল শ্রমবাজার। তিনি বলেন, "এই বছর আমরা প্রতিবেদনের ফলাফল ও পূর্বাভাসের ভিত্তিতে মুদ্রানীতি এমনভাবে সমন্বয় করেছি, যাতে এই দুই বিপরীতধর্মী ঝুঁকির মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা সম্ভব হয়। আমরা জানি না আগামী বছর বাণিজ্য নীতি, মূল্যস্ফীতি বা অর্থনীতিতে কী ঘটবে, কিন্তু আমরা সেটির জন্য যথেষ্ট প্রস্তুত।"

বর্তমানে EUR/USD পেয়ারের টেকনিক্যাল চিত্র অনুযায়ী ক্রেতাদের জন্য মূল লক্ষ্য হবে এই পেয়ারের মূল্যকে 1.1770 লেভেলে নিয়ে যাওয়া। শুধুমাত্র মূল্য এই লেভেলে আসতে পারলেই 1.1790 লেভেলে পৌঁছানোর সুযোগ তৈরি হবে। সেখান থেকে যদি ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত থাকে, তাহলে এই পেয়ারের মূল্য 1.1820 পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে, তবে বড় ট্রেডারদের সহায়তা ছাড়া এটি করা বেশ কঠিন হবে। সবচেয়ে দূরবর্তী লক্ষ্যমাত্রা থাকবে 1.1855-এর লেভেল। যদি মার্কেটে নিম্নমুখী প্রবণতা দেখা যায়, তাহলে মূল্য 1.1735 লেভেলে থাকা অবস্থায় বড় ক্রেতারা সক্রিয় হতে পারে বলে আমি প্রত্যাশা করছি। যদি মূল্য এই লেভেলে থাকা অবস্থায় কেউ সক্রিয় না হয়, তাহলে আরও এই পেয়ারের মূল্য 1.1700 পর্যন্ত নেমে যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করাই শ্রেয়, অথবা 1.1685 থেকে লং পজিশন ওপেন করা যেতে পারে।

বর্তমান পরিস্থিতিতে GBP/USD পেয়ারের টেকনিক্যাল চিত্র অনুযায়ী ক্রেতাদের সর্বপ্রথম লক্ষ্যমাত্রা হলো এই পেয়ারের মূল্যের নিকটতম রেজিস্ট্যান্স 1.3395 ব্রেক করা। কেবল তখনই মূল্যের 1.3430-এর দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা যেতে পারে, যদিও এই লেভেল ব্রেকআউট করে ঊর্ধ্বমুখী হওয়া যথেষ্ট কঠিন হবে। সবচেয়ে দূরবর্তী লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে 1.3474 লেভেল নির্ধারণ করা যেতে পারে। যদি এই পেয়ারের দরপতন হয়, তাহলে মূল্য 1.3355 লেভেলে থাকা অবস্থায় বিক্রেতারা সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করবে। যদি তারা এতে সফল হয়, তাহলে মূল্য এই রেঞ্জ ব্রেক করে নিম্নমুখী হলে সেটি বুলিশ পজিশনের জন্য বড় ধাক্কা হবে এবং GBP/USD পেয়ারের মূল্য দ্রত 1.3320 লেভেলে নেমে আসবে, এবং সেখান থেকে সম্ভাব্য পরবর্তী লক্ষ্যমাত্রা হবে 1.3285 লেভেল।