logo

FX.co ★ ডলার নিজের লেজে কামড় দিয়েছে, এদিকে ইউরোর পরিস্থিতিও সহজ নয়

ডলার নিজের লেজে কামড় দিয়েছে, এদিকে ইউরোর পরিস্থিতিও সহজ নয়

ডলার নিজের লেজে কামড় দিয়েছে, এদিকে ইউরোর পরিস্থিতিও সহজ নয়

অনেক বিশ্লেষক একমত যে রাশিয়ার বিরুদ্ধে কঠোর নিষেধাজ্ঞা পশ্চিমাদের নিজস্ব অর্থনীতি এবং জাতীয় মুদ্রার ক্ষতি করছে। বিশেষ করে ডলারের ক্ষেত্রে বিষয়টি সত্য। উল্লেখ্য যে ইউরোও ভূ-রাজনীতির চাপে পড়েছে এবং চাপ মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে, ডলারকে একটি সাপের সাথে তুলনা করা হয়েছে যে তার নিজের লেজে কামড় দেয়ার মত অথবা একটি বিচ্ছু তার নিজের শরীর দংশন করার মত। এই প্রবাদটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেত্রে প্রাসংগিক। বিশ্লেষক ব্র্যাংকো মার্সেটিক বলেছেন, "রাশিয়া বিরোধী নিষেধাজ্ঞা প্রবর্তনের মাধ্যমে ডলার ব্যক্তিগতভাবে তার বিশ্ব আধিপত্যকে ক্ষুন্ন করেছে।" তিনি বর্তমান পরিস্থিতির বিড়ম্বনার উপর জোর দিয়েছিলেন এবং বিশ্বাস করেন যে মস্কোর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞামূলক ব্যবস্থা প্রবর্তনের আমেরিকান কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত "ওয়াশিংটনের একটি কৌশলগত ভুল।"

মার্সেটিকের মতে, মার্কিন ডলারের নেতৃত্বে আর্থিক ব্যবস্থায় সবচেয়ে শক্তিশালী আঘাতটি এসেছে তাত নিজের কাছ থেকেই। ফলস্বরূপ, "ডলার বিনিময় হারে পতন বা সুদের হার বৃদ্ধির ঝুঁকি ছাড়াই" মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র রপ্তানির চেয়ে বেশি পণ্য আমদানি করার ক্ষমতা হারাতে পারে।

বর্তমান পরিস্থিতির অবনতি গ্রিনব্যাকের প্রভাবশালী ভূমিকা হ্রাসে অবদান রাখছে। যাইহোক, অনেক বিশ্লেষক নিশ্চিত যে ইউরোর মত মার্কিন ডলারের শীর্ষঅবস্থান কাঁপানো কঠিন। একটি অস্থিতিশীল ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে, ইউরো তার আমেরিকান প্রতিদ্বন্দ্বীর তুলনায় নেতিবাচক পরিবর্তনের জন্য বেশি সংবেদনশীল। ২৫ এপ্রিল, সোমবার বিনিয়োগকারীদের ঝুঁকি-বিরোধী সম্পদে প্রত্যাবর্তনের মধ্যে ডলার ক্রমাগতভাবে আরও ব্যয়বহুল হয়ে উঠছিল। মার্কিন মুদ্রা ফেডারেল রিজার্ভের মূল হার বৃদ্ধির প্রত্যাশার কারণেও সমর্থন পেয়ছে। ২৬ এপ্রিল, মঙ্গলবার সকালে EUR/USD পেয়ারটি 1.0715 স্তরে ট্রেড করছিল।ডলার নিজের লেজে কামড় দিয়েছে, এদিকে ইউরোর পরিস্থিতিও সহজ নয়

বিশেষজ্ঞদের মতে, বিনিয়োগকারীদের ঝুঁকি এড়ানোর মনোভাব ইউরোর মধ্যমেয়াদী বৃদ্ধির সম্ভাবনার জন্য সমস্যা তৈরি করছে। বাজারের মনোভাবের এই ধরনের অবনতি EUR/USD জোড়ার অবস্থানকে দুর্বল করে এবং ইউরোকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করবে। নিরাপদ সম্পদে বাজার অংশগ্রহণকারীদের জোরালো প্রত্যাবর্তন EUR-এর উপর বিয়ারিশ চাপ বৃদ্ধি করছে।

এই প্রেক্ষিতে, মার্কিন মুদ্রা আরও আত্মবিশ্বাসী বোধ করছে, প্রতিযোগীদের একপাশে ঠেলে এবং বিস্তৃত মুদ্রার বিপরীতে আক্রমণাত্মকভাবে চলছে। বর্তমানে, মুদ্রানীতির মূল চালক হলো ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি। এটি আমেরিকান, ইউরোপীয় এবং অন্যান্য মুদ্রার স্বল্প-মেয়াদী গতিবিধি নির্ধারণ করবে।

বিশ্ব কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর আর্থিক নীতি কঠোর করার গতিপথের পুনর্মূল্যায়ন আবার এজেন্ডায় ছিল। অনেক ট্রেডার এবং বিনিয়োগকারী আশংকা করছেন যে ফেড পরবর্তী মিটিংয়ে 50 বেসিস পয়েন্ট হার বাড়াবে। ৪মে নির্ধারিত বৈঠকে 75 বেসিস পয়েন্ট বৃদ্ধিও সম্ভব। কারণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মুদ্রাস্ফীতি আকাশচুম্বী হয়েছে, যা নিয়ন্ত্রণ করা ক্রমশ কঠিন জপ্যে পড়ছে।

বিশেষজ্ঞরা স্বীকার করেছেন যে মে মাসের বৈঠকে, পরিমাণগত সহজীকরণ (QE) কার্যক্রমের অংশ হিসাবে তৈরি ফেডের ব্যালেন্স শীট হ্রাস করার জন্য একটি প্রোগ্রাম চালু করা হবে। এর বাস্তবায়ন ডলার তহবিলের ব্যয় বৃদ্ধি এবং ডলারের তারল্যের বহিঃপ্রবাহে অবদান রাখে। বিশ্লেষকরা জোর দিয়ে বলেছেন যে এই পদক্ষেপগুলো ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদের জন্য প্রতিকূল।

এর আগে, ফেডের চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েল আর্থিক নীতির দ্রুত কঠোরকরণের প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করেছিলেন। তিনি নিশ্চিত করেছেন যে ৪ মে বৈঠকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক হার একবারে অর্ধেক বাড়াতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ২০২২ সালের শেষ নাগাদ, ফেডারেল তহবিলের হার 3-3.5% এ পৌঁছাবে।

যাইহোক, মুদ্রানীতির দ্রুত কঠোরকরণের করা হলে মার্কিন অর্থনীতি মন্দার উচ্চ ঝুঁকিতে পড়ার আশংকা রয়েছে। ডয়েচে ব্যাংকের বিশ্লেষকরা এই মতটি তুলে ধরেছেন এবং তারা বিশ্বাস করেন যে আক্রমনাত্মক হার বৃদ্ধি এবং ফেডের ব্যালেন্স শীটের দ্রুত রোলব্যাকের সমন্বয় অর্থনীতির জন্য একটি সরাসরি মন্দার পথ তৈরি করে করবে। বিশেষজ্ঞরা ২০২৩ সালে এই ধরনের পরিস্থিতি হতে পারে বলে মনে করেন।

ইউরোপীয় সেন্ট্রাল ব্যাংকের 'হক' এবং 'ডাভ'দের মধ্যে ক্রমবর্ধমান মতবিরোধের পটভূমিতে আর্থিক কৌশলের যথাযথতা সম্পর্কিত এই ধরনের সংঘর্ষ ঘটছে। প্রথম দল আর্থিক নীতির কঠোরকরণকে ত্বরান্বিত করতে চায়, যখন পরবর্তী দল অর্থনীতিতে আরও উদ্দীপনার উপর জোর দেয়। এদিকে, 'হক' গ্রুপ বন্ড রিডেম্পশন কর্মসূচি কমিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জুলাইয়ের সভায় হার বাড়াতে প্রস্তুত।

একটি প্রকৃত মুদ্রানীতি গঠনে আপস অর্জন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি অর্থনীতির ভবিষ্যতের একটি মূল উপাদান। ইসিবি ভাইস-প্রেসিডেন্ট লুইস ডি গুইন্ডোসের মতে, এই বিষয়টি ইউরোপীয় এবং বিশ্ব অর্থনীতির অন্তর্গত।

এই কর্মকর্তা বলেন, "আর্থিক নীতির দিকনির্দেশ নির্ধারণের চাবিকাঠি" হলো মুদ্রাস্ফীতি প্রত্যাশা করা, যা এখন খুব প্রাসঙ্গিক। এই মুহুর্তে, মুদ্রাস্ফীতি সম্পর্কিত বিষয়গুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভবিষ্যত মুদ্রানীতি নির্ধারণ করবে।

* এখানে পোস্ট করা মার্কেট বিশ্লেষণ মানে আপনার সচেতনতা বৃদ্ধি করা, কিন্তু একটি ট্রেড করার নির্দেশনা প্রদান করা নয়
Go to the articles list Go to this author's articles Open trading account