logo

FX.co ★ ডলারের তীব্র দরপতন ঘটেছে — কিন্তু কেন?

ডলারের তীব্র দরপতন ঘটেছে — কিন্তু কেন?

গতকাল, মার্কিন ডলার বেশিরভাগ ঝুঁকিপূর্ণ অ্যাসেটের বিপরীতে তীব্রভাবে দরপতনের শিকার হয়েছে — এবং এর পেছনে একাধিক কারণ রয়েছে।

ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েল তাঁর বক্তৃতায় উল্লেখ করেন যে মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদের হার কমানোর পরিকল্পনা করছে, যদিও সরকারি কার্যক্রম বন্ধ থাকায় অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশিত না হওয়ায় সার্বিক পরিস্থিতি নির্ধারণে ফেডের সক্ষমতা ব্যাপকভাবে সীমিত হয়ে পড়েছে।

ডলারের তীব্র দরপতন ঘটেছে — কিন্তু কেন?

মঙ্গলবার ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন ফর বিজনেস ইকোনোমিক্সের বার্ষিক সম্মেলনে বক্তৃতা দিতে গিয়ে পাওয়েল বলেন, নীতিনির্ধারকরা সেপ্টেম্বর মাসে যখন সুদের হার কমিয়ে বছরে আরও দুইবার সুদের হার হ্রাসের পূর্বাভাস দিয়েছিলেন, তখন থেকে এখন পর্যন্ত মার্কিন অর্থনীতির সামগ্রিক পরিস্থিতি প্রায় অপরিবর্তিত রয়ে গেছে।

পাওয়েল বারবার কর্মসংস্থান বৃদ্ধির দুর্বলতার ওপর জোর দিয়েছেন এবং জানান যে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। লিখিত বক্তৃতার পরে এক প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি বলেন, "আমরা এমন একটি পর্যায়ে পৌঁছেছি, যেখানে চাকরির জন্য আবেদনকারীর সংখ্যা কমে গেলে তা বেকারত্বের হারকেও প্রভাবিত করতে পারে। আমরা একটি ব্যতিক্রমী সময় পার করেছি, যখন সবকিছু একসঙ্গে মন্থর হয়ে গিয়েছে, এবং এখন আমাদের শ্রমবাজারের দিকে দৃষ্টি দেয়ার সময় এসেছে।"

এই মন্তব্যগুলো এমন এক সময়ে এসেছে, যখন বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে অনিশ্চয়তা বাড়ছে এবং মার্কিন অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি মন্থর হয়ে পড়ার আশঙ্কাও বাড়ছে। বিনিয়োগকারীরা ফেডের আর্থিক নীতিমালাকে আরও নমনীয় করার প্রস্তুতিকে একটি ইতিবাচক সংকেত হিসেবে বিবেচনা করেছে, যা অর্থনৈতিক কার্যকলাপ ধরে রাখতে সহায়তা করতে পারে। তবে অনেক অর্থনীতিবিদ এই নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, বিশেষ করে সরকারি কার্যক্রম বন্ধ থাকার ফলে প্রয়োজনীয় প্রতিবেদন ঘাটতির কারণে, যা বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি মূল্যায়ন এবং যুক্তিযুক্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া জটিল হয়ে পড়েছে।

যেহেতু প্রতিবেদনভিত্তিক ফলাফল পাওয়া যাচ্ছে, তাই ভবিষ্যতে সুদের হার নির্ধারণের সময় ফেডকে পরোক্ষ সূচক এবং অভ্যন্তরীণ মূল্যায়নের ওপর নির্ভর করতে হবে। এই বাস্তবতা ভবিষ্যৎ পূর্বাভাসে ভুল হওয়ার এবং মার্কেটের পরিস্থিতির পরিবর্তনের প্রতি উপযোগীভাবে প্রতিক্রিয়া দিতে না পারার ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে দেবে। তবুও, পাওয়েলের মন্তব্য স্পষ্ট করে দিয়েছে যে অনিশ্চয়তা সত্ত্বেও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা এবং প্রবৃদ্ধি ধরে রাখাই ফেডের মূল অগ্রাধিকার।

পাওয়েলের বক্তব্যের পর অক্টোবর মাসে সুদের হার হ্রাসের প্রত্যাশা প্রায় অপরিবর্তিত রয়েছে। ফেডারেল ফান্ড ফিউচার কন্ট্র্যাক্ট অনুযায়ী, সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা প্রায় ১০০%-এর কাছাকাছি রয়েছে।

মনে করিয়ে দিচ্ছি যে, ফেড সেপ্টেম্বর মাসে সুদের হার 4.00–4.25% রেঞ্জে নামিয়ে আনে, যা গত ডিসেম্বরের পর প্রথমবারের মতো এই ধরনের পদক্ষেপ ছিল এবং তা গ্রীষ্মকালীন কর্মসংস্থান বৃদ্ধির এক তীব্র মন্দার পরপরই করা হয়। তবে বেকারত্বের হার এখনও তুলনামূলকভাবে কম রয়েছে — যা মাত্র 4.3%।

ফেডের পরবর্তী বৈঠক ২৮–২৯ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে বলে নির্ধারিত রয়েছে। গত মাসে ১৯ জন ফেড সদস্যের পূর্বাভাস অনুযায়ী, চলতি বছরে আরও দুইবার সুদের হার হ্রাস করা হবে বলে মনে করা হয়েছিল। তবে ৯ জন কর্মকর্তা মনে করেন, সুদের হার একবার বা তারও কম কমানো হলেও যথেষ্ট হতে পারে।

এখন EUR/USD পেয়ারের বর্তমান টেকনিক্যাল চিত্র অনুসারে, ক্রেতাদের পরবর্তী লক্ষ্য হবে 1.1630 লেভেল ব্রেক করিয়ে মূল্যকে ঊর্ধ্বমুখী করা। শুধুমাত্র তখনই তারা এই পেয়ারের মূল্যের 1.1660 লেভেল টেস্ট করানোর পরিকল্পনা করতে পারবে। এরপর সম্ভাব্য লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে 1.1690 লেভেল বিবেচনা করা যেতে পারে — তবে বড় ট্রেডারদের সমর্থন ছাড়া এই পেয়ারের মূল্যের পক্ষে এই উচ্চতায় পৌঁছানো বেশ কষ্টসাধ্য হবে। সবচেয়ে দূরবর্তী লক্ষ্যমাত্রা হলো 1.1715 লেভেল। যদি ইন্সট্রুমেন্টটির মূল্য কমে 1.1600 লেভেলের দিকে যায়, তাহলে বড় ক্রেতাদের সক্রিয় হওয়ার সম্ভাবনা দেখা যেতে পারে। যদি তারা সক্রিয় না হয়, তবে এই পেয়ারের মূল্যের 1.1570 লেভেলে নেমে যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করা অথবা সরাসরি 1.1545 লেভেল থেকে লং পজিশনে এন্ট্রি করাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।

GBP/USD পেয়ারের ক্ষেত্রে, পাউন্ডের ক্রেতাদের জন্য প্রথম এবং প্রধান লক্ষ্যমাত্রা হবে নিকটতম রেজিস্ট্যান্স 1.3360 ব্রেক করানো। কেবল এরপরই এই পেয়ারের মূল্যের 1.3390-এ পৌঁছানোর বিষয়ে আশাবাদী হওয়া যাবে, যেখান থেকে আরও ঊর্ধ্বমুখী হওয়া বেশ কঠিন হবে। সবচেয়ে দূরবর্তী লক্ষ্যমাত্রা হবে 1.3425 লেভেল। যদি এই পেয়ারের মূল্য নিম্নমুখী হলে, তাহলে বিক্রেতারা এই পেয়ারের মূল্যকে 1.3330 লেভেলে পুনরুদ্ধার করার চেষ্টা করবে। যদি তারা এতে সফল হয়, তাহলে মূল্য এই রেঞ্জ ব্রেক করলে ক্রেতাদের অবস্থানে বড় ধরনের আঘাত আসবে এবং GBP/USD পেয়ারের মূল্য আরও নিচে 1.3290 এবং সম্ভবত 1.3250-এর দিকে নেমে যেতে পারে।

* এখানে পোস্ট করা মার্কেট বিশ্লেষণ মানে আপনার সচেতনতা বৃদ্ধি করা, কিন্তু একটি ট্রেড করার নির্দেশনা প্রদান করা নয়
Go to the articles list Go to this author's articles Open trading account