logo

FX.co ★ সুদের হার আরও কম হওয়া উচিত

সুদের হার আরও কম হওয়া উচিত

গতকাল, বোস্টনের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট সুসান কলিন্স বলেন যে মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চলতি বছর সুদের হার আরও কমানো উচিত, যাতে শ্রমবাজারকে সহায়তা প্রদান করা যায় — তবে সেইসঙ্গে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য সুদের হারকে যথেষ্ট উচ্চ পর্যায়ে রাখাও প্রয়োজন।

সুদের হার আরও কম হওয়া উচিত

মঙ্গলবার ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব বোস্টনের একটি অনুষ্ঠানে লিখিত বক্তৃতায় কলিন্স বলেন, "যেহেতু মুদ্রাস্ফীতির ঝুঁকি কিছুটা সীমাবদ্ধ হয়ে এসেছে এবং বেকারত্ব বৃদ্ধির ঝুঁকি বেড়েছে, তাই শ্রমবাজারকে সহায়তা করার জন্য এ বছর আর্থিক নীতিমালা নমনীয়করণের প্রবণতা অব্যাহত রাখা যুক্তিসঙ্গত হবে বলে মনে হচ্ছে।"

তাঁর এই মন্তব্য এমন এক সময় এসেছে যখন ফেডের ভবিষ্যৎ আর্থিক নীতিমালা নিয়ে বিতর্ক চলছে, এবং ট্রেডাররা এর সম্ভাব্য অর্থনৈতিক প্রভাব সতর্কভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। কলিন্সের বক্তব্য ফেডের দায়িত্বের জটিলতা তুলে ধরেছে — একদিকে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে, অন্যদিকে শ্রমবাজারকে সক্রিয় রাখতে হবে। যদিও সাম্প্রতিক সময়ে মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমেছে, তবুও তা এখনও লক্ষ্যমাত্রার ওপরে রয়ে গেছে। তাই কলিন্স ধীরে-ধীরে সুদের হার কমানোর পদ্ধতির পক্ষে মত দিয়েছেন — যা তুলনামূলকভাবে উচ্চ স্তরে সুদের হার বজায় রেখেই গৃহীত হবে এবং এর মাধ্যমে অর্থনৈতিক ঝুঁকি কমিয়ে আনা সম্ভব হতে পারে।

তবে অর্থনীতিবিদ ও বিশ্লেষকদের মধ্যে ফেডের নীতিগত কৌশল নিয়ে মতপার্থক্য রয়েছে। কেউ কেউ মনে করেন, দ্রুত এবং তুলনামূলকভাবে বেশি মাত্রায় সুদের হার হ্রাস করা উচিত যাতে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে প্রাধান্য দেওয়া যায়, যদিও তার ফলে অস্থায়ীভাবে মুদ্রাস্ফীতি বাড়তে পারে। অন্যদিকে, অনেকেই আরও সতর্ক পদক্ষেপের পক্ষে যারা মনে করেন, খুব দ্রুত সুদের হার কমালে মূল্যস্ফীতি স্থিতিশীল করার প্রচেষ্টা ব্যাহত হতে পারে।

কলিন্স বলেন, "সামান্য অতিরিক্ত নমনীয় নীতিমালার পরেও আর্থিক নীতিমালা এখনও কিছুটা সীমাবদ্ধ থাকবে।এর ফলে, যখন শুল্কজনিত প্রভাব অর্থনীতির ভেতর পুরোপুরি কাজ করা শুরু করবে, তখন মুদ্রাস্ফীতি আবারও কমে আসবে।"

এখন বিনিয়োগকারীরা আশা করছেন যে, চলতি মাসের শেষ দিকে অনুষ্ঠেয় ফেডের বৈঠকে সুদের হার কমানোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে — গতকাল ফেডের চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েলও একই ইঙ্গিত দিয়েছেন। এটি হলে চলতি বছরে দ্বিতীয়বারের মতো সুদের হার হ্রাস করা হবে। এর আগে সেপ্টেম্বর মাসে, ফেড মূল সুদের হার এক চতুরাংশ পয়েন্ট কমিয়ে 4.00–4.25%-এ নামিয়ে এনেছিল।

কলিন্স আরও বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে কর্মসংস্থান হ্রাসের পেছনে প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করা কঠিন — এটি শ্রম চাহিদার কমে যাওয়ার ফল, না কি অভিবাসন কমে যাওয়ার ফলে শ্রমের যোগান কমেছে তা এখনই বলা মুশকিল। তাঁর মতে, বেকারত্বের হার স্থিতিশীল রাখতে যা প্রতি মাসে প্রয়োজন, সেই হারে কর্মসংস্থান সৃষ্টির সংখ্যা মহামারির আগের প্রায় 80,000 থেকে কমে এসে এখন 40,000-এ পৌঁছে যেতে পারে। বোস্টন ফেডের প্রধান আরও যুক্ত করেন, তিনি আশা করছেন ২০২৫ সালের শেষ ভাগে এবং ২০২৬ সালের শুরুতে বেকারত্বের হার কিছুটা হলেও বাড়বে – তবে তা তুলনামূলকভাবে সীমিত মাত্রায়।

সুসান কলিন্সকে সুদের হারের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা নিয়েও প্রশ্ন করা হয়েছিল। উত্তরে তিনি বলেন, আর্থিক নীতিমালা কোনো পূর্ব নির্ধারিত পথ অনুযায়ী চলে না এবং তিনি এমন একটি পরিস্থিতিরও কল্পনা করতে পারেন, যেখানে অক্টোবর মাসে সুদের হার হ্রাসের পর নীতিনির্ধারকরা সুদের হার অপরিবর্তিত রাখার সিদ্ধান্তও নিতে পারেন — বিশেষ করে যদি মার্কিন-চীন বাণিজ্য উত্তেজনা নতুন করে বৃদ্ধি পায়। তিনি বলেন, "সুদের হার ২৫ বেসিস পয়েন্ট হ্রাস যথোপযুক্ত হতে পারে, তবে আমি মনে করি আমাদের আগেভাগেই কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত হবে না।"

ফেডের আর্থিক নীতিমালার প্রেক্ষিতে কলিন্সের এইসব মন্তব্যের পর বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ অ্যাসেটের বিপরীতে ডলারের উল্লেখযোগ্য দরপতন শুরু হয়।

এখন EUR/USD পেয়ারের বর্তমান টেকনিক্যাল চিত্র অনুসারে, ক্রেতাদের পরবর্তী লক্ষ্য হবে 1.1630 লেভেল ব্রেক করিয়ে মূল্যকে ঊর্ধ্বমুখী করা। শুধুমাত্র তখনই তারা এই পেয়ারের মূল্যের 1.1660 লেভেল টেস্ট করানোর পরিকল্পনা করতে পারবে। এরপর সম্ভাব্য লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে 1.1690 লেভেল বিবেচনা করা যেতে পারে — তবে বড় ট্রেডারদের সমর্থন ছাড়া এই পেয়ারের মূল্যের পক্ষে এই উচ্চতায় পৌঁছানো বেশ কষ্টসাধ্য হবে। সবচেয়ে দূরবর্তী লক্ষ্যমাত্রা হলো 1.1715 লেভেল। যদি ইন্সট্রুমেন্টটির মূল্য কমে 1.1600 লেভেলের দিকে যায়, তাহলে বড় ক্রেতাদের সক্রিয় হওয়ার সম্ভাবনা দেখা যেতে পারে। যদি তারা সক্রিয় না হয়, তবে এই পেয়ারের মূল্যের 1.1570 লেভেলে নেমে যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করা অথবা সরাসরি 1.1545 লেভেল থেকে লং পজিশনে এন্ট্রি করাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।


GBP/USD পেয়ারের ক্ষেত্রে, পাউন্ডের ক্রেতাদের জন্য প্রথম এবং প্রধান লক্ষ্যমাত্রা হবে নিকটতম রেজিস্ট্যান্স 1.3360 ব্রেক করানো। কেবল এরপরই এই পেয়ারের মূল্যের 1.3390-এ পৌঁছানোর বিষয়ে আশাবাদী হওয়া যাবে, যেখান থেকে আরও ঊর্ধ্বমুখী হওয়া বেশ কঠিন হবে। সবচেয়ে দূরবর্তী লক্ষ্যমাত্রা হবে 1.3425 লেভেল। যদি এই পেয়ারের মূল্য নিম্নমুখী হলে, তাহলে বিক্রেতারা এই পেয়ারের মূল্যকে 1.3330 লেভেলে পুনরুদ্ধার করার চেষ্টা করবে। যদি তারা এতে সফল হয়, তাহলে মূল্য এই রেঞ্জ ব্রেক করলে ক্রেতাদের অবস্থানে বড় ধরনের আঘাত আসবে এবং GBP/USD পেয়ারের মূল্য আরও নিচে 1.3290 এবং সম্ভবত 1.3250-এর দিকে নেমে যেতে পারে।

* এখানে পোস্ট করা মার্কেট বিশ্লেষণ মানে আপনার সচেতনতা বৃদ্ধি করা, কিন্তু একটি ট্রেড করার নির্দেশনা প্রদান করা নয়
Go to the articles list Go to this author's articles Open trading account