ঘন্টাভিত্তিক চার্ট অনুযায়ী শুক্রবার GBP/USD পেয়ারের মূল্য 1.3352–1.3362-এর রেজিস্ট্যান্স লেভেল থেকে দ্বিতীয়বারের মতো রিবাউন্ড করেছে, যা নির্দেশ করে যে এই পেয়ার এখন 61.8% ফিবোনাচ্চি লেভেল 1.3294-এর দিকে স্বল্পমেয়াদি স্বতঃস্ফূর্ত দরপতনের শিকার হতে পারে। গত সপ্তাহে এই পেয়ারের মূল্যের বুলিশ প্রবণতা বেশ শক্তিশালী ছিল, তবে সোমবার মার্কেটে তেমন শক্তিশালী মুভমেন্ট নাও দেখা যেতে পারে। এই পেয়ারের মূল্য যদি 1.3352–1.3362 রেজিস্ট্যান্স লেভেলের উপরে কনসোলিডেট করে, তাহলে তা 1.3425 লেভেলের দিকে ধারাবাহিক বুলিশ প্রবণতার ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।

ওয়েভ স্ট্রাকচার বর্তমানে একটি "বুলিশ" ফর্মে রূপান্তরিত হয়েছে। সর্বশেষ সম্পন্ন হওয়া নিম্নমুখী ওয়েভটি পূর্ববর্তী লো ব্রেক করতে পারেনি, কিন্তু নতুন ঊর্ধ্বমুখী ওয়েভটি সহজেই পূর্ববর্তী পিক ব্রেক করে দিয়েছে। অর্থাৎ, বর্তমানে সক্রিয়ভাবে বুলিশ প্রবণতা বিরাজ করছে। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে পাউন্ডের উপর মৌলিক প্রেক্ষাপটের প্রভাব তুলনামূলকভাবে দুর্বল ছিল, তবে বিক্রেতারা ইতোমধ্যেই তা বিবেচনায় নিয়েছে, আর মার্কিন সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটও খুব বেশি ইতিবাচক নয়। ক্রেতাদের জন্য নিজেদের অবস্থান ধরে রাখা কঠিন হতে পারে, তবে তারা এখন বিক্রেতাদের তুলনায় স্পষ্টভাবে শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে।
শুক্রবারের সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট ট্রেডারদের যথেষ্ট অনুপ্রাণিত করতে পারেনি ট্রেডারদের। তিনটি মার্কিন অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে, যার মধ্যে কেবল ইউনিভার্সিটি অফ মিশিগান থেকে প্রকাশিত কনজ্যুমার সেন্টিমেন্ট ইনডেক্সেরই কিছুটা তাৎপর্যপূর্ণ ফলাফল পরিলক্ষিত হয়েছে। ডিসেম্বরে এই ইনডেক্সটি 51.0 থেকে বেড়ে 53.3-এ পৌঁছায়, যা অধিকাংশ ট্রেডারদের প্রত্যাশার বাইরে ছিল। তবুও, এই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ডলারের মূল্যের যেটুকু বৃদ্ধি পেয়েছে তা চিহ্নিত করার মতন নয়। আজ মার্কিন ডলারের মূল্যের মৃদু ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট অব্যাহত থাকতে পারে, তবে সামনে ফেডারেল ওপেন মার্কেট কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে—যেটি আবার ডলারকে চ্যালেঞ্জের ম্মুখে ফেলতে পারে। ইতোমধ্যে বুধবার ফেডের মুদ্রানীতি নমনীয় করা হতে পারে, কারণ দুই দফা সুদের হার কমানো সত্ত্বেও মার্কিন শ্রমবাজার পরিস্থিতির এখনো কোনো উল্লেখযোগ্য পুনরুদ্ধার হয়নি। সেই জন্য সোমবার ও মঙ্গলবারের ডলারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার প্রবণতা ট্রেডারদের বিভ্রান্ত করতে পারে। বুধবার থেকেই ফের ক্রেতাদের নতুন আক্রমণ শুরু হতে পারে, এবং বর্তমান প্রবণতা বুলিশ বলেই ধরে নেওয়া উচিত। যদি ডিসেম্বরেও শ্রমবাজারের পরিস্থিতির পরিবর্তন না হয়, তবে ২০২৬ সালের শুরুতে ফেড আরও একবার সুদের হার হ্রাস করতে বাধ্য হবে—যা হয়তো ডোনাল্ড ট্রাম্পের জন্য আনন্দের বিষয় হতে পারে, তবে ডলারের জন্য তা হবে দুর্ভাগ্যজনক।

৪-ঘন্টার টাইমফ্রেমে এই পেয়ারের মূল্য ডাউনওয়ার্ড চ্যানেল ব্রেক করে 1.3118–1.3140 লেভেলের উপরে কনসোলিডেট করেছে এবং 1.3339 লেভেলের দিকে অগ্রসর হয়েছে। যদি এখান থেকে রিবাউন্ড হয়, তবে তা মার্কিন ডলারের পক্ষে কাজ করতে পারে এবং 1.3140 লেভেলের দিকে এই পেয়ারের সম্ভাব্য দরপতন শুরু হতে পারে। অন্যদিকে, যদি মূল্য 1.3339-এর ওপরে কনসোলিডেট করে, তাহলে ফিবোনাচ্চি 100.0% লেভেল 1.3435 পর্যন্ত আরও ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার প্রত্যাশা করা যেতে পারে। আজ নতুন কোনো ডাইভারজেন্স দেখা যাচ্ছে না।
COT (কমিটমেন্ট অব ট্রেডার্স) রিপোর্ট:

সর্বশেষ প্রকাশিত সাপ্তাহিক প্রতিবেদন অনুযায়ী "নন-কমার্শিয়াল" ট্রেডারদের মনোভাব কিছুটা কম বুলিশ হয়ে উঠেছে, যদিও এটি ২৮ অক্টোবরের পুরনো প্রতিবেদন। ওই সপ্তাহে লং পজিশন বেড়েছে ৭,০৫২টি এবং শর্ট পজিশন বেড়েছে ১০,৫৩৯টি। ঐ সময় লং পজিশন ছিল প্রায় ৮২,০০০ এবং শর্ট পজিশন ছিল ১,০২০০০-এর কাছাকাছি। তবে এখনকার বাস্তবতা ভিন্নও হতে পারে।
আমার দৃষ্টিকোণ থেকে, বর্তমান পরিস্থিতিতে পাউন্ড তুলনামূলকভাবে 'কম বিপজ্জনক'। যদিও স্বল্পমেয়াদে ডলারের চাহিদা বাড়তি রয়েছে, আমি মনে করি এটি একটি অস্থায়ী অবস্থা। ট্রাম্পের প্রশাসনিক নীতিমালা শ্রমবাজারকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করেছে এবং ফেড এখন মুদ্রানীতি আরও নমনীয় করতে বাধ্য হচ্ছে—বেকারত্ব হ্রাস এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির উদ্দীপনা প্রদানের লক্ষ্যে। সেক্ষেত্রে, যদি ব্যাংক অব ইংল্যান্ড আরও একবার সুদের হার হ্রাস করে, তবে ফেড পুরো ২০২৬ সালজুড়েই মুদ্রানীতি নমনীয় করতে পারে। ডলার ইতোমধ্যে ২০২৫ সালে দরপতনের শিকার হয়েছে, এবং ২০২৬ সালও এর থেকে ভালো কোনো পরিস্থিতি দেখা যাবে—এমন নিশ্চয়তা নেই।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যের অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডার:
৮ ডিসেম্বরের অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে উল্লেখযোগ্য কিছু নেই। অর্থাৎ সোমবারের মার্কেটে সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটের তেমন কোনো প্রভাব থাকবে না।
GBP/USD পূর্বাভাস ও ট্রেডারদের জন্য পরামর্শ:
- আজকের ট্রেডিংয়ে শর্ট পজিশন বিবেচনায় নেওয়া যেতে পারে যদি 1.3352–1.3362 রেজিস্ট্যান্স লেভেল থেকে রিবাউন্ড ঘটে, লক্ষ্যমাত্রা হবে 1.3294।
- 1.3186–1.3214 লেভেল থেকে রিবাউন্ড হলে লং পজিশন নেওয়ার সুযোগ ছিল এবং লক্ষ্যমাত্রা ছিল 1.3294 এবং 1.3352—দুটিই বাস্তবায়িত হয়েছে।
- মূল্য 1.3352–1.3362 লেভেলের ওপরে থাকা অবস্থায় সেশন ক্লোজ হয় তাহলে নতুন লং পজিশন ওপেন করা যেতে পারে যদি, সেক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হবে 1.3425।
ফিবোনাচ্চি গ্রিড:
- ঘন্টাভিত্তিক চার্টে 1.3470 থেকে 1.3010 পর্যন্ত।
- ৪-ঘণ্টার চার্টে 1.3431 থেকে 1.2104 পর্যন্ত।
