মঙ্গলবারের ট্রেডিংয়ের বিশ্লেষণ:
GBP/USD পেয়ারের 1-ঘন্টার চার্ট

মঙ্গলবারও GBP/USD পেয়ারের মূল্যের শক্তিশালী ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা পরিলক্ষিত হয়েছে—এই পেয়ারের মূল্য প্রথমে অ্যাসেন্ডিং ট্রেন্ড লাইনের কাছ থেকে বাউন্স করে এবং এরপর ক্রমান্বয়ে ঊর্ধ্বমুখী হতে থাকে। দিনভর ট্রেডাররা একাধিক টেকনিক্যাল বাই সিগন্যাল গঠিত হতে দেখেছে। এসব সিগন্যাল ছাড়াও সকালে যুক্তরাজ্যে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়, যা শুরুতে নতুন ট্রেডারদের জন্য বিশ্লেষণ করা কঠিন ছিল। তবে এগুলোর ফলাফল যুক্তিসংগতভাবে এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার ইঙ্গিত প্রদান করে। আমাদের মতে, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন ছিল বেকারত্বের হার নয় বরং মজুরি বৃদ্ধির হার। মজুরি বৃদ্ধির হার সরাসরি মূল্যস্ফীতির ওপর প্রভাব ফেলে, আর মূল্যস্ফীতির হার আবার ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের আর্থিক নীতিমালার ওপর প্রভাব বিস্তার করে। তাই, যদি মজুরি বৃদ্ধির হার শক্তিশালী হয়, তাহলে এটি নির্দেশ করে যে যুক্তরাজ্যে মূল্যস্ফীতির গতি পুনরায় বাড়তে পারে, যা ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের প্রত্যাশার বিপরীত। আজ সকালের মধ্যেই নতুন ভোক্তা মূল্য সূচক (CPI) প্রকাশিত হওয়ার কথা রয়েছে, এবং আগামীকাল ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। অর্থাৎ এখন ব্রিটিশ পাউন্ডের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং ঘটনাবহুল সময় অতিক্রান্ত হচ্ছে। যদি দেশটির মূল্যস্ফীতি বেড়েই চলে, তাহলে এটি ব্রিটিশ মুদ্রার পক্ষে বড় সমর্থন হিসেবে কাজ করবে এবং ব্যাংক অব ইংল্যান্ড ডিসেম্বর মাসে আর্থিক নীতিমালা নমনীয় করার পরিকল্পনা পুনর্বিবেচনা করতে বাধ্য হতে পারে।
GBP/USD পেয়ারের 5M চার্ট

মঙ্গলবার ৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে মোট চারটি বাই সিগন্যাল গঠিত হয়, যেগুলো মূলত একটি অপরটির পুনরাবৃত্তিমূলক ছিল। প্রথমে এই পেয়ারের মূল্য 1.3413–1.3421 এরিয়া ব্রেক করে ঊর্ধ্বমুখী হয়, এরপর এই পেয়ারের মূল্য উপর থেকে ওই লেভেল তিনবার রিটেস্ট করে। আজ সম্ভবত মূল্য চতুর্থবারের মতো রিটেস্ট করতে পারে এবং সেক্ষেত্রে এই পেয়ারের মূল্যের আরও ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা শুরু হতে পারে, যেখানে মূল্যের 1.3466–1.3475 এরিয়ার দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা যেতে পারে।
বুধবার কীভাবে ট্রেডিং করতে হবে:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে স্থানীয় পর্যায়ে GBP/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার গঠন অব্যাহত রয়েছে। আগেই উল্লেখ করা হয়েছে, মধ্যমেয়াদে ডলারের দর বৃদ্ধির জন্য বৈশ্বিক পর্যায়ে কোনো কারণ নেই, তাই আপাতত আমরা শুধুমাত্র এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্টেরই প্রত্যাশা করছি। সামগ্রিকভাবে, আমরা 2025 সালে পরিলক্ষিত বৈশ্বিক ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা পুনরায় শুরু হওয়ার সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছি, যা সামনের কয়েক মাসে এই পেয়ারের মূল্যকে 1.4000 লেভেলের দিকেও নিয়ে যেতে পারে।
বুধবার, যদি এই পেয়ারের মূল্য 1.3413–1.3421 এরিয়া থেকে বাউন্স করে, তাহলে মূল্যের 1.3466–1.3475-এর দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে নতুন ট্রেডাররা নতুন লং পজিশন ওপেন করার বিষয়টি বিবেচনা করতে পারেন। অন্যদিকে, যদি এই পেয়ারের মূল্য উল্লিখিত এরিয়াটি ব্রেক করে নিম্নমুখী হয়, তাহলে শর্ট পজিশন ওপেন করার সুযোগ তৈরি হবে, মূল্যের 1.3319–1.3331-এর দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা যেতে পারে।
৫-মিনিটের টাইমফ্রেম অনুযায়ী বিবেচনাযোগ্য গুরুত্বপূর্ণ ট্রেডিং লেভেলগুলো হলো 1.2913, 1.2980-1.2993, 1.3043, 1.3096-1.3107, 1.3203-1.3212, 1.3259-1.3267, 1.3319-1.3331, 1.3413-1.3421, 1.3466-1.3475, 1.3529-1.3543, এবং 1.3574-1.3590। বুধবার যুক্তরাজ্যে মূল্যস্ফীতি প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার কথা রয়েছে, যা মূলত আজকের দিনের একমাত্র গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। যদি প্রকাশিত মূল্যস্ফীতির হার প্রত্যাশার চেয়ে বেশি হয়, তাহলে ব্রিটিশ মুদ্রার মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্টের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে, যদি মূল্যস্ফীতি হ্রাস পায়, তাহলে এই পেয়ারে মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টে কী কী রয়েছে:
- সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
- লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
- MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
নতুন ট্রেডারদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
