সোমবারের ট্রেডিংয়ের বিশ্লেষণ:
GBP/USD পেয়ারের 1-ঘন্টার চার্ট

সোমবার GBP/USD পেয়ারের মূল্য ১১০ পিপস বেড়ে সহজেই সাপ্তাহিক সাইডওয়েজ চ্যানেল 1.3331–1.3437 থেকে বেরিয়ে যায়। আমরা ইতোপূর্বেই উল্লেখ করেছি যে, ব্রিটিশ পাউন্ডের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বজায় থাকবে, এবং একইসাথে মার্কিন ডলারের দরপতন হতে থাকবে। বর্তমানে "থিন" মার্কেট বা কম লিকুইডিটি বিরাজমান, যার কারণে মার্কেটের বড় ট্রেডাররা ছুটির এ সময়টিতে তুলনামূলকভাবে সহজেই তাদের কাঙ্ক্ষিত দিকেই মূল্যের মুভমেন্ট ঘটাতে পারছে।স্মরণ করিয়ে দিই, গত সপ্তাহেই একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল ও কয়েকটি ফান্ডামেন্টাল ইভেন্টও অনুষ্ঠিত হয়েছে, অথচ তখন এই পেয়ারের মূল্য পুরো সপ্তাহজুড়ে সাইডওয়েজ চ্যানেলের মধ্যেই ছিল। কিন্তু ছুটির সপ্তাহের প্রথম দিনেই (সোমবার), শুধুমাত্র যুক্তরাজ্যের জিডিপি প্রতিবেদন প্রকাশিত হলেও তা মার্কেটে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলেনি, তথাপি পাউন্ডের মূল্য ১০০ পিপস বেড়েছে। এর মানে হলো, সোমবার ট্রেডারদের বাস্তবিক অর্থে কোনো প্রতিক্রিয়া জানানোর মতো কারণ ছিল না। তারপরও রাতেরবেলায় ব্রিটিশ মুদ্রার মূল্য বৃদ্ধি এই ইঙ্গিত দেয় যে, গত পাঁচ মাস ধরে চলা নিম্নমুখী কারেকশন শেষ হয়েছে এবং ২০২৫ সালের পরিলক্ষিত ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা নতুন করে শুরু হয়েছে।
GBP/USD পেয়ারের 5M চার্ট

৫-মিনিট টাইমফ্রেমে সোমবার একটি ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়। মার্কিন ট্রেডিং সেশনে এই পেয়ারের মূল্য 1.3437–1.3446 রেঞ্জের ব্রেক করে ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায়, নতুন ট্রেডাররা লং পজিশন ওপেন করতে সক্ষম হন। এই ট্রেডগুলো আজকেও প্রাসঙ্গিক রয়েছে, তাই সারাদিনে মুনাফা করার সম্ভাবনা বাড়তে পারে।
মঙ্গলবার কীভাবে ট্রেডিং করতে হবে:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে, GBP/USD পেয়ারের মূল্যের ফ্ল্যাট রেঞ্জভিত্তিক মুভমেন্টের সমাপ্তি ঘটে এখন আবার ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা গঠিত হচ্ছে। আমরা বারবার এই সম্ভাবনার কথা বলেছি এবং এবারও আমরা ধারণা করছি এটি পুরোপুরিভাবে যৌক্তিক পরিস্থিতি। বর্তমান বাস্তবতায় মধ্যমেয়াদে মার্কিন ডলারের দর বৃদ্ধির জন্য কোনো মৌলিক ভিত্তি নেই, তাই আমরা কেবল এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্টেরই প্রত্যাশা করছি। সম্পূর্ণ পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে, আমরা ধারণা করছি যে, ২০২৫ সালে পরিলক্ষিত ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা আবার শুরু হয়েছে, যা পরবর্তী কয়েক মাসে এই পেয়ারের মূল্যকে 1.4000-এর লক্ষ্যমাত্রা পর্যন্ত নিয়ে যেতে পারে।
মঙ্গলবার, যদি এই পেয়ারের মূল্য 1.3437–1.3446 এরিয়া থেকে "বাউন্স" করে, তাহলে মূল্যের 1.3529-এর দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে নতুন ট্রেডাররা নতুন লং পজিশন ওপেন করার কথা বিবেচনা করতে পারেন। তবে, এটি মনে রাখা জরুরি যে, সোমবার ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট একটি বাই সিগনাল গঠিত হয়েছে।
৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে ট্রেডিংয়ের জন্য বিবেচ্য লেভেলগুলো হলো 1.2913, 1.2980-1.2993, 1.3043, 1.3096-1.3107, 1.3203-1.3212, 1.3259-1.3267, 1.3319-1.3331, 1.3437-1.3446, 1.3529-1.3543, এবং 1.3574-1.3590। মঙ্গলবারে যুক্তরাজ্যে কোনো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে না, তবে যুক্তরাষ্ট্রে শিল্প উৎপাদন, ডিউরেবল গুডস অর্ডার এবং তৃতীয় প্রান্তিকের জিডিপির দ্বিতীয় অনুমান সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে। এই প্রতিবেদনগুলোর ফলাফল গুরুত্বপূর্ণ, এবং এই সপ্তাহে আর অন্য কোনো অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে না। অতএব, আজকের মার্কিন ট্রেডিং সেশনে এই পেয়ারের মূল্য হয় আরও দ্রুত ঊর্ধ্বমুখী হতে পারে, অথবা তীব্রভাবে নিম্নমুখী হয়ে যেতে পারে—দুই দিকেই সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়ার জন্য প্রস্তুত থাকাই বুদ্ধিমানের কাজ।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টে কী কী রয়েছে:
- সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
- লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
- MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
নতুন ট্রেডারদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
