মঙ্গলবারের ট্রেডিংয়ের পর্যালোচনা:
EUR/USD পেয়ারের 1-ঘন্টার চার্ট

মঙ্গলবার EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত ছিল। টানা দ্বিতীয় দিনের মতো এই পেয়ারের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে, যদিও এজন্য মার্কেটে খুব একটা যথেষ্ট ভিত্তি দৃশ্যমান ছিল না। তবে এটি মনে রাখা জরুরি যে, আমরা নিয়মিতভাবে এই পেয়ারের মূল্যের চলমান ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতাকে সহায়তা দেয়া বিভিন্ন বিষয়ের কথা আলোচনা করে থাকি। সেজন্য স্থানীয় কোনো ইভেন্ট বা অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের অনুপস্থিতিতেও এই পেয়ারের মূল্য বৃদ্ধি একদম স্বাভাবিক ও প্রত্যাশিত — কারণ দৈনিক টাইমফ্রেমে এখনো ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বিরাজ করছে। দুর্ভাগ্যবশত, এখনো পর্যন্ত এই পেয়ারের মূল্য 1.1800–1.1830 এর মূল রেজিস্ট্যান্স লেভেল ব্রেক করে ঊর্ধ্বমুখী হতে পারেনি, ফলে এই সাইডওয়েজ চ্যানেলের মধ্যেই এই পেয়ারের মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে একটি অ্যাসেন্ডিং ট্রেন্ডলাইন গঠিত হয়েছে, এবং যতক্ষণ না মূল্য এই ট্রেন্ডলাইনের নিচে স্থিতিশীল হচ্ছে, ততক্ষণ ইউরোর নতুন দরপতনের সম্ভাবনা খুবই কম।
গতকাল যুক্তরাষ্ট্রে তৃতীয় প্রান্তিকের জিডিপি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়, যা পূর্বাভাসের তুলনায় অনেক বেশি ইতিবাচক ফলাফল প্রদর্শন করেছে এবং সাময়িকভাবে ডলারের দরপতন থামিয়ে দিয়েছে। তবে পূর্বানুমান অনুযায়ী, এটি শুধু কিছু সময়ের জন্য দরপতন থামিয়েছিল, পুরোপুরিভাবে থামাতে পারেনি। অন্য দুটি প্রতিবেদন — শিল্প উৎপাদন ও ডিউরেবল গুডস অর্ডার — আবারও দুর্বল ফলাফল প্রদর্শন করেছে, যার কারণে ডলারের মূল্য বৃদ্ধির প্রবণতা দীর্ঘস্থায়ী হয়নি।
EUR/USD 5M পেয়ারের চার্ট

মঙ্গলবার ৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে কোনো ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়নি। সর্বশেষ বাই সিগনালটি সোমবার সন্ধ্যায় গঠিত হয়েছিল, এবং যারা সেটি কাজে লাগিয়েছেন তারা ভালো লাভ করতে পেরেছেন। এই পেয়ারের মূল্য 1.1745–1.1754 এরিয়ার উপরে স্থির হয়েছিল, এবং আজ এই পেয়ারের মূল্য 1.1808 লেভেল ব্রেক করার চেষ্টা করতে পারে।
বুধবার কীভাবে ট্রেডিং করতে হবে:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেম অনুসারে, EUR/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা গঠনের ধারাবাহিকতা এখনো বজায় রয়েছে। খুব শিগগিরই এই পেয়ারের মূল্য আবারও 1.1800–1.1830-এর এরিয়াতে পৌঁছাতে পারে, যা দৈনিক টাইমফ্রেমে দৃশ্যমান ফ্ল্যাট রেঞ্জের উপরের সীমানা। এইবার এই রেঞ্জ ব্রেকআউট করে মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে। সামগ্রিক ভিত্তিতে মার্কিন ডলারের জন্য মৌলিক এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট বেশ নেতিবাচক, তাই মধ্যমেয়াদে এই পেয়ারের আরও মূল্য বৃদ্ধির প্রত্যাশা করা যায়।
বুধবারের ট্রেডিংয়ের পরিকল্পনা অনুসারে, নতুন ট্রেডাররা 1.1808 লেভেল থেকে ট্রেড করার কথা চিন্তা করতে পারেন, যেখান থেকে রাতেরবেলা এই পেয়ারের মূল্য রিবাউন্ড করেছে। এই লেভেল থেকে বাউন্স হলে সেটি একটি সেল সিগনাল হিসেবে বিবেচিত হতে পারে; তবে বর্তমানে মার্কেটে স্বল্পমেয়াদে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বিরাজ করছে। এই লেভেল ব্রেকআউট করে এই পেয়ারের মূল্য ঊর্ধ্বমুখী হলে, সেটা মূল্যের 1.1851-এর দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে লং পজিশন ওপেন করার সিগন্যাল হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে।
৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে নিম্নলিখিত গুরুত্বপূর্ণ লেভেলগুলো বিবেচনা করা উচিত: 1.1354-1.1363, 1.1413, 1.1455-1.1474, 1.1527-1.1531, 1.1550, 1.1584-1.1591, 1.1655-1.1666, 1.1745-1.1754, 1.1808, 1.1851, 1.1908, 1.1970-1.1988। বুধবার ইউরোজোন বা যুক্তরাষ্ট্র—কোনো অঞ্চলেই গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে না। তবুও, মার্কেটের ট্রেডাররা এখনো ছুটির মৌসুমে ট্রেডের জন্য প্রস্তুত রয়েছে, তাই এই পেয়ারের আরও মূল্য বৃদ্ধির সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টে কী কী রয়েছে:
- সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
- লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
- MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
নতুন ট্রেডারদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
